বর্তমান বিশ্বের সর্বোচ্চ চাহিদা সম্পন্ন বিষয়গুলোর অন্যতম কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বা সিএসই। পকেটের স্মার্টফোন থেকে মহাকাশের স্যাটেলাইট, সর্বত্রই রয়েছে এই শিক্ষার উপস্থিতি এবং প্রয়োগ। বিস্তৃত শিক্ষা খাত এবং নিশ্চিত কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকায় এখন শিক্ষার্থীদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে এ বিষয়টি। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে সবাই একাধারে এ বিষয়টি নিয়ে পড়ছে বা পড়ার জন্য তৈরি হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের এ বিষয়টিতে পড়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষার যথেষ্ট কারণও আছে। চাকরির সহজলভ্যতা, উচ্চ বেতন, বহির্বিশ্বে গবেষণা এবং উচ্চশিক্ষার সুযোগ- এ বিষয়গুলোই প্রধান প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। তা ছাড়া বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তুলনামূলকভাবে সহজেই প্রথম শ্রেণির চাকরির সুযোগ এবং অসংখ্য সফটওয়্যার ফার্ম, যা শিক্ষার্থীদের মৌলিক বিষয়গুলোর বাইরে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো পড়তে উদ্বুদ্ধ করছে। সে ক্ষেত্রে চাকরির পরিধি বিবেচনায় প্রথমেই আসে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নাম।
শিক্ষার্থীদের মেধা বিকশিত না হওয়ার অন্যতম কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ধরা-বাঁধা কাঠামোগত সিলেবাস অনুসরণ করা। তাই প্রযুক্তিভিত্তিক আধুনিক শিক্ষা নিশ্চিতের লক্ষ্যে প্রয়োজন বাস্তবসম্মত সমসাময়িক কারিকুলাম বা আউটকাম বেজড কারিকুলাম প্রণয়ন এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ আধুনিক ল্যাবরেটরি স্থাপন। এ সবগুলো বিষয়ই বিদ্যমান রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটিতে (আইএসইউ)।
দেশের শীর্ষস্থানীয় পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটি (আইএসইউ)। লক্ষ্য দেশে মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করা। সরকার ও ইউজিসি অনুমোদিত এবং ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০’-অনুযায়ী ২০১৮ সালে ৩ জুন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের দুই কর্ণধার ও আইএসইউ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম মোশাররফ হুসাইন ও ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. আতিকুর রহমান বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। আইএসইউ উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. আব্দুল আউয়াল খান। প্রতিষ্ঠাতারা বলছেন, স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের ৩০টির বেশি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটি অন্যতম। শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে তুলে ইন্টার্নশিপ ছাড়াও চাকরির সুযোগ দিতে প্রস্তুত তারা।
আইএসইউর কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারপারসন প্রফেসর ড. মো. হাকিকুর রহমান বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতি ও প্রসারের ফলে এই খাতে দক্ষ জনবলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে প্রযুক্তির দূরদৃষ্টি ও সঠিক ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাই এই ক্ষেত্রকে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বিভাগে অভিজ্ঞ ও নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ গড়ে উঠেছে। আমরা বিশ্বাস করি, তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি হাতেকলমে প্রযুক্তি শিক্ষার সমন্বয়ই শিক্ষার্থীদের সফলতার চাবিকাঠি। এ লক্ষ্যেই আমরা যুগোপযোগী কারিকুলাম এবং আধুনিক, স্বয়ংসম্পূর্ণ ল্যাবরেটরি ব্যবহার করে শিক্ষা দিচ্ছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য হোস্টেল সুবিধা আছে। ক্যাম্পাসে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। রয়েছে সিসিটিভি, মাল্টিমিডিয়া প্রোজেক্টর সুবিধাসংবলিত ক্লাসরুম, ওয়াইফাই সংযোগসহ সব আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। বিশ্ববিদ্যালয়টি ধূমপানমুক্ত, সার্বিকভাবে পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত। বিশ্ববিদ্যালয় ভবনের অষ্টম তলায় রয়েছে সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। এ ছাড়া আছে হাতে-কলমে শিক্ষাদানের জন্য স্মার্ট ক্লাসরুম, আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, ফিজিক্স ল্যাব, সার্কিট ল্যাব, কেমিস্ট্রি ল্যাব এবং ল্যাংগুয়েজ ল্যাব, যা শিক্ষার্থীদের জন্য সবসময় খোলা থাকে।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ে চারটি অনুষদের অধীনে সাতটি বিভাগ আছে। এর মধ্যে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (বিবিএ) ও মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এমবিএ)। ফ্যাকাল্টি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের অধীনে আছে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (এএমএম)। ফ্যাকাল্টি অব হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেসের অধীনে বিএ (অনার্স) ইন ইংলিশ, এমএ ইন ইংলিশ লিটারেচার অ্যান্ড কালচারাল স্টাডিজ ও ব্যাচেলর অব ল’ (এলএলবি অনার্স) রয়েছে। আছে মাস্টার্স অব পাবলিক হেলথ।
আইএসইউতে জানুয়ারি-জুন এবং জুলাই-ডিসেম্বর হিসেবে বছরে দুটি সেমিস্টারের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়; যার মধ্যে পূর্ণ অনুদান (১০০%) থেকে শুরু করে আংশিক মওকুফসহ শিক্ষার্থীদের মোট ১৪টি ক্যাটাগরিতে স্কলারশিপ, বৃত্তি এবং ওয়েভার দেওয়া হয়।